এম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥
কক্সবাজারের প্রমত্তা বাঁকখালী নদী দখলমুক্ত করতে ৪০ লাখ টাকা তহবিল সংগ্রহ করার ঘোষনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন। বুধবার ৮ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে জেলা প্রশাসক বলেন, জেলার ঐতিহ্যবাহী বাঁকখালী নদী রক্ষায় এবং হাইকোর্টের নির্দেশ মতে বাঁকখালী নদী ভরাট করে গড়ে ওঠা সকল অবৈধ স্থাপনা দ্রুত উচ্ছেদ করা হবে। এজন্য সকল নাগরিক সমাজের সহযোগীতাও কামনা করেন তিনি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষন পরিষদের উদ্যোগে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০১৬ উপলক্ষে গোলটেবিল বৈঠক ৮ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন।
গোলটেবিল বৈঠকে জেলা প্রশাসক বলেন, বাকঁখালী নদী দখল তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের সকল সুযোগ সুবিধা বন্ধ করা হবে। এনিয়ে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের সাথে বৈঠক করা হবে। বৈঠকে জেলার বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ, পৌর কাউন্সিলরগণ, পরিবেশবাদী সংগঠন, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন পেশাজীবী অংশ নেন।
গোল টেবিল বৈঠকে কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষন পরিষদের পক্ষে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সাবেক সভাপতি দীপক শর্মা দীপু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের আহবায়ক মোহাম্মদ উর রহমান মাসুদ ও সদস্য সচিব চঞ্চল দাশ গুপ্ত।
প্রসংগত, কক্সবাজারের কস্তুরাঘাট থেকে মহেশখালী চ্যানেল ও ঘাট পর্যন্ত বাঁকখালী নদীর দু’পাড়ের ১৪৬৮ একর জায়গা বিআইডব্লিউটিএ’কে বুঝিয়ে দিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ হাইকোর্ট এর মধ্যে কক্সবাজার অংশে ৮২১ একর এবং মহেশখালী অংশে ৪৪৭ একর জমি রয়েছে।
২০১৩ সালে মোঃ রাইহানুল মোস্তফার দায়ের করা মামলায় গত ৬ মার্চ মহামান্য হাইকোর্ট এর বিচারপতি জোবায়ের রহমান চৌধূরী এবং বিচারপতি মো: কামরুজ্জামানের বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। রায়ের কপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যেই উক্ত জায়গা বিআইডব্লিউটিএ’র কাছে হস্তান্তর করে আদালততে অবহিত করার জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়া হয়।
দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার বাঁকখালী নদীর তীরে (কস্তুরাঘাট) অভ্যন্তরীণ নদী বন্দর নির্মাণে প্রস্তাবিত জায়গা দখল করে রেখেছে ৫১ প্রভাবশালী। এদের মধ্যে বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী রয়েছেন। দখল করা জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে বরফকলসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। বাঁকখালী নদীর পাশ দখল করে নির্মিত এসব স্থাপনা ভাড়া দিয়ে দখলদাররা প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা আয় করছে।
————-
পাঠকের মতামত: